সৌদিতে ভিক্ষা করা পঙ্গু মতিয়ারের সংসার চলে কৃষি কাজে

কর্তৃক farukgangni

ফারুক আহমেদ :

সৌদি পুলিশের হাতে আটক মতিয়ার রহমান ওরফে মন্টু মিয়ার বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের সিন্দুরকৌটা গ্রামে। সে ঐ গ্রামের হারু মিয়ার ছেলে। গত ২২ জুন বিকালে ভিক্ষাবৃত্তি করার অভিযোগে মদিনা শরীফ থেকে তাকে সৌদি পুলিশ আটক করে। এ ঘটনা জানার পর বাংলাদেশ হজ মিশনের একজন কর্মী থানায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য’র সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মতিয়ার রহমার ওরফে মন্টু মিয়া প্রায় ৩০ বছর আগে নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলো। তৎকালিন সময়ে একটি দূর্ঘটনায় তার দুই হাতের কজ্বি কেটে ফেলা হয়। এরপর থেকে সে তেমন কাজকর্ম করতে পারেনা। তখন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পৈত্তিক সূত্রে পাওয়া প্রায় ৮ বিঘা জমিতে কৃষি কাজকর্ম করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। সংসারে তার তিন মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। এছাড়া তিন ভাই বোনের মধ্যে মতিয়ার রহমার ওরফে মন্টু মিয়া মেজ।
সূত্রে জানা যায়,গত ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে প্রথম হজ করতে যায়। এরপর কয়েকবার ভারত ভ্রমন ও সৌদিতে হজ করতে যায়। ভারত ও সৌদি আরবে যাওয়ার কারন জানতে না পারলেও লোকমুখে ভিক্ষাবৃত্তির গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়।
গত ২২ জুন বিকালে ভিক্ষাবৃত্তি করার অভিযোগে মদিনা শরীফ থেকে তাকে সৌদি পুলিশ আটক ও মুচলেকায় মুক্তি পাওয়ার পর বিষয়টি জানজানি হলে এলাকায় শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা।
মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, তার স্বামী হজ করতে গেছে। এর বাইরে তিনি কিছু জানে না। তবে বিভিন্ন তার স্বামীকে নিয়ে গণমাধ্যমে অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে সত্য ঘটনা তুলে ধরার অনুরোধ করেন।
সিন্দুরকৌটা গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যচাষী কামাল হোসেন বলেন, এক সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী মতিয়ার রহমান ওরফে মন্টু মিয়ার অপরাধ কর্মকান্ডের কথা শোনা গেলেও গত ২৫ বছর যাবৎ সে কৃষি কাজকর্ম করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এলাকায় বর্তমানে তার তেমন কোন বদনাম নেই, নেই কোন অঢেল সম্পত্তি। তবে এলাকাবাসি ভিক্ষাবৃত্তির বিষয়টি কমবেশি জানে।
স্থানীরা বলছেন, মতিয়ার রহমার ওরফে মন্টু মিয়া চালাক চতুর হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে নানা কৌশলে ভিক্ষাবৃত্তি করলেও পৈত্তিক সম্পতি ছাড়া তেমন কিছু করতে পারেনি।
মতিয়ার রহমার ওরফে মন্টু মিয়ার ভাই ঘটক আতিয়ার রহমান বলেন,ভাঙ্গাচোরা ঘরে বসবাস করে মতিয়ার সহ তার স্ত্রী সন্তান। তার যদি এত জমিজমা কিংবা অঢেল সম্পত্তি থাকতো তাহলে ভাঙ্গাচোরা ঘরে বসবাস করতো না। তার ভাই সৌদিতে ভিক্ষা করেছে না কি ঘটনা ঘটেছে তারা জানেন না।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন,ইতোপূর্বে দুটি মামলা ছিলো সেগুলোয় খালাস পেয়েছে।
মতিয়ার রহমানের মা আমেনা খাতুন বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে ফেরত পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন,আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তেমন কোন সম্পত্তি না থাকায় কৃষি কাজ করে জীবন চালাতে হয়।
হজ শাখার উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন বলেন, মতিয়ার রহমান সৌদিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে একারনে দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতারের জন্য ইমেগ্রেশনে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া মতিয়ার রহমানকে সৌদিতে হজ করতে পাঠানো ধানসিড়ি ট্রাভেল এয়ার সার্ভিস (হজ লাইসেন্স নং ৭৩৭) এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!