গাংনীর ৪শ’ বস্তা চাল চুয়াডাঙ্গায় আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

গাংনীর দুজন ব্যবসায়ীর ৪শ’ বস্তা চাল আটক করেছে চুয়াডাঙ্গায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যেরাতে দর্শনা পিয়াস তেলপাম্প থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি ট্রাক ভর্তি চাল উদ্ধার করা হয়। পরে বৈধ মালিকানা পাওয়ায় চাল ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এদিকে সরকারী বিধি অনুসরন করে চাল বিক্রি করে চাল জব্দ ও প্রশ্নের সম্মুখিন হওয়ায় অনেকেই প্রকল্প সভাপতি হতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। একারনে উন্নয়ন কাজ কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে কয়েকজন প্রকল্প সভাপতি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামুন অর রশীদ জানান, দর্শনা পিয়াস তেলপাম্পে রাখা একটি ট্রাকে কিছু চাল পাচার করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাকের চালক ও সহকারী পালিয়ে যায়। পরে চাল সহ ট্রাক পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। আটককৃত চালের মালিক গাংনীর মজিরুল ইসলাম ও আব্বাস আলী নামের দুজন ব্যবসায়ী। চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম জানান,আটককৃত চালের বৈধ কাগজপত্র থাকায় যাচাই বাছাই শেষে মালিকের কাছে চাল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক বলেন,কাবিখার বরাদ্দ জনসংখ্যা অনুযায়ী ইউনিয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে বিভ্রান্তি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। জানা গেছে,কাবিখা প্রকল্পে মটমুড়া ইউপি সদস্য ৪.৫,ধানখোলা ইউপি সদস্য আবু বক্কর ৪.৫,তেঁতুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ৩,কাজিপুর ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম,৩,সাহারবাটি আব্দুল মজিদ ২.৫ ও কাথুলী ইউপি সদস্য একরামুল হকের ২.৫টর চাল বরাদ্দ রয়েছে। এসব চাল বৈধ ভাবে গাংনীর মজিরুল ইসলাম ও আব্বাস আলী নামের দুজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছে প্রকল্প সভাপতিরা।  সাহাবুদ্দিন সদস্য সাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান,তার নামে বরাদ্দকৃত চাল সরকালী বিধি মোতাবেক উত্তোলন করে মজিরুল ইসলাম ও আব্বাস আলী নামের দুজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন।  তেঁতুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন,সরকারী বিধি অনুযায়ী চাল বিক্রি করেও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অনেকেই প্রকল্প সভাপতি হতে অনাগ্রহ প্রকাশ করবে।
কাথুলী ইউপি সদস্য একরামুল হক জানান,ইউনিয়ন পরিষদের কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দ চাল নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। চাল বৈধভাবে উত্তোলন বিক্রি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। কতিপয় রাজনৈতিক নেতার কোন্দলের কারনে প্রকল্প সভাপতিতের নামে বরাদ্দকৃত চাল বিক্রয় নিয়ে টানাটানি করে প্রকল্প বাধাগ্রস্থ করছে। গাংনী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বিশ্বাস জানান,প্রকল্পের সভাপতিদের চাল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান,আটককৃত চাল বৈধ। বিধি অনুযায়ী প্রকল্প সভাপতিরা বিক্রি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এটা নিয়ে বিভ্রানিস্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
তবে ব্যবসায়ী মজিরুল ইসলাম জানান,চালের মালিক তিনি নন প্রকতৃ মালিক আব্বাস আলী। আব্বাস আলী জানান,তিনি সরকারী বিধি মোতাবেক প্রকল্প সভাপতিদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করেছেন। একটি মহলের ইন্দনে একেরপর চাল আটকের ঘটনা ঘটছে। যা ব্যবসায়ীক ভাবে সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। উল্লেখ্য : সম্প্রতি ১২শ’৬৬ বস্তা চাল আটক হয় চুয়াডাঙ্গাতে। চাল আটকের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন পৃথক দুটি কমিটি গঠন করে। কমিটি চাল বিক্রি বৈধ বলে প্রতিবেদন দেয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!