করোনার প্রভাবে গাংনীর কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ। মানবেতর জীবন পার করছে দিনমজুররা

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

করোনার প্রভাবে মেহেরপুর জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। তাই চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো। করোনা ভাইরাস সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুর জেলায় অঘোষিক লকডাউন ঘোষনা করেছে। এ ঘোষনার পর থেকে ভোগ্যপন্য ব্যতিত সকল দোকান পাটের পাশাপাশি বাসচলাচলও বন্ধ রয়েছে। যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় খাবার সংকটে শ্রমজীবি মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।
কয়েকজন দিনমুজুর গাংনী নিউজকে জানান,করোনা ভাইরাসের সংক্রামন ছড়িয়ে পড়ার আশংখায় সকল কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে । ঘরে কোন খাদ্য খাবার না থাকায় ছেলে মেয়ে সংসার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করে। তাই অনেক খরচ। সরকারী বে সরকারী ভাবে এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পৌছাইছি তাদের কাছে। দিনের বেশির ভাগ সময় অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছি। এভাবে চলতে থাকলে খাদ্য সংকটে মরতে হবে।

গাংনী বাজারের কয়েকজন পাখিভ্যান ও অটোচালক গাংনী নিউজকে জানায়,আগে ৫/৭শত টাকা রোজকার হলেও করোনার প্রভাবে রাস্তাঘাটে মানুষ চলাচল না করায় রোজগার শুন্যে’র কোটায়। যদি সব কিছু বন্ধ হয়ে যায় কী খাবো , সংসার কিভাবে চালাব ভাবতে পারছি না। কোনো জমানো টাকাও নেই যে তাই দিয়ে চলব। যত সমস্যা সব আমাদের মত গরীব মানুষের।

হোটেল শ্রমিকরা শ্রমিকরা গাংনী নিউজকে জানান, করোনার প্রভাবে হোটেলর বন্ধ করে আমাদের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। তাই এখন ঘরে বসে আছি। জানিনা এখন কি করবো। আমরা গরীব মানুষ কিছু না করলে খাব কি।   বাস ও ট্রাক শ্রমিকরা গাংনী নিউজকে জানান, যানবাহন চলাচল না করায় বেশিরভাগ শ্রমিককে ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে।  চা দোকানিরা গাংনী নিউজকে জানান,করোনা ভাইরাসের কারনে তাদের চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দোকান খুলতে না পারার কারনে সংসার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।  গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম জানান,সরকারী ও ব্যক্তিগত ভাবে হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য সহায়তা চলমান রয়েছে।

গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক গাংনী নিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষ তেমন ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। আবার যাদের বাসাবাড়িতে কাজ ছিল তারাও কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কাজও বন্ধ। তাই শ্রমজীবি মানুষ সমস্যায় আছে এটা সত্য। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ২ হাজার পরিবারকে সহায়তা করছি।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনী গাংনী নিউজকে বলেন, জেলার অতি দরিদ্র মানুষের একটি তালিকা করে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সরকার ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে কার্ডধারীদের ১০ টাকা কেজি দরে ও ভিজিডি ভিজিএফ চাল বিতরন অব্যাহত রেখেছে। সরকার পর্যাপ্ত বরাদ্দ রেখেছে কেউ আতংকিত হবেনা না। কেউ না খেয়ে থাকবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি খাদ্য পৌছে দেয়া হবে।
মেহেরপুর ২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন গাংনী নিউজকে বলেন,করোনা দুর্যোগে অসহায় মানুষ গুলোর পাশে সরকার রয়েছে। ইতো মধ্যে সরকার ১৫ মে:টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। সরকার প্রয়োজনে আরো বরাদ্দ দেবে। এছাড়া আমি ব্যক্তিগত ভাবে হতদরিদ্র মানুষের বাড়িবাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌছে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। দু’একদিনের মধ্যে জনসমাগম এড়াতে খুদ্র ব্যবসায়ী, অটোবাইক, পাখিভ্যান ও দোকান শ্রমিকদের বাড়িবাড়ি খাদ্য পৌছে দেয়া হবে। তিনি দুর্যোগ মুহুর্তে সকল ভেদাভেদ ভুলে দরিদ্র মানুষের কল্যানে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। শ্রম ও দরিদ্র মানুষের কষ্ট লাঘবে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোন ভাবে কোন দরিদ্র মানুষকে অভুক্ত রাখা হবেনা। তবে দুর্যোগে সকলকে ধৈয্য ধরে পরিস্থিততি মোকাবেলা করতে আহবান জানান তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!