গাংনীতে একই নামে দুই মাধ্যমিক বিদ্যালয়

কর্তৃক farukgangni

ফারুক আহমেদ :

মেহেরপুরের গাংনীতে একই নামে চলছে দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এনিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে শিক্ষক শিক্ষার্থীও অভিভাবকবৃন্দরা। এক পক্ষ হাইকোর্টে রিট করায় আটকে গেছে বিদ্যালয় দুুটির এমপিভুক্তি সহ উন্নয়ন কার্যক্রম। ফলে দীর্ঘ ২১ বছর বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। দ্রুত সময়ে মামলা নিস্পত্তি , বিদ্যালয় এমপিও ভূক্ত ও শিক্ষার্থীদের পাঠ উপযোগি পরিবেশ চান স্থানীয়রা।
১৯৯৯ সালে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মোমিনপুর, গোয়ালগ্রাম, চরগোয়ালগ্রাম,মোহাম্মদপুর এই ৪ গ্রামের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে “এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়” নামে মোমিনপুর গ্রামে শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। শুরুতে বিদ্যালয়টিতে ব্যাপক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। পরে পার্শবর্তী কয়েকটি গ্রামে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গ্রামে চলে যায়। ফলে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দেয় বিদ্যালয়টিতে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ক্রমে বিদ্যালয়টি চরগোয়ালগ্রামে স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কুল স্থানান্তরের আদেশের বিরুদ্ধে ২০২০ সালেই মোমিনপুর গ্রামের এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করে। হাইকোর্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় স্থান্তারের অনুমোদন স্থগিত করে। এতে বিপাকে পড়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষর্থী সহ অভিভাবকরা। বিদ্যালয় এমপিও ভূক্তির সকল শর্ত পূরণ থাকলেও হাইকোর্টের স্থগিত আদেশের কারনে আটকে গেছে এমপিও ভুক্ত সহ সকল কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থি ও শিক্ষক কর্মচারীরা বঞ্চিত হচ্ছে সরকারের দেওয়া সকল সুযোগ সুবিধা থেকে।
স্বানান্তরকৃত এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আনোয়ারুল হুদা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে তারা স্কুল স্থানান্তর করেছেন। কিন্তু মোমিনপুর গ্রামের এনামুল হক মামলা করে এমপিও সহ সরকারের সকল সুবিধা থেকে আমাদের বঞ্চিত করছে।
শিক্ষকরা বলেন,শিক্ষকরা দীর্ঘদিন যাবৎ এমপি ভুক্ত না হওয়ার কারনে অনাহারে অর্ধারে সংসার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। যখন এমপিও ভুক্তি সহ অবকাঠামো উন্নয়নের দারপ্রান্তে ঠিক সে সময় কতিপয় ব্যক্তির কুটচালে থমকে গেছে কার্যক্রম। অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মামলা জটিলতায় তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আধুনিক ও ডিজিটার শিক্ষা সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
মামলার বাদি এনামুল হক বলেন, তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করায় মামলা করা হয়েছে।
পুরাতন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাবী রুহুল আমিন বলেন,এমজিজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (চরগোয়ালগ্রাম) তাদের কাছে পাসওয়ার্ড ও আইডি থাকায় তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের রেজিস্টেশেন করা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাশার বলেন, পুরাতন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা একেবারে কম স্থানাত্রিত (চরগোয়ালগ্রামে) প্রতিষ্ঠানে ৩শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়মিত ক্লাস করছে। পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকই নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছে। বিষয়টি সূরহা হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে নিয়মিত পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং শিক্ষা অফিস ও প্রশাসনও ঝামেলায় পড়ে গেছে। নতুন পুরানো কোন স্কুলেই মামলা থাকার কারণে কমিটি নেই। আর কমিটি না থাকার কারনে অনেক কার্যক্রমই করা সম্ভব হচ্ছেনা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি খানম বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আমাদের স্থানীয় ভাবে যদি কিছু করা যায় তা করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!