গাংনীতে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সের কর্মী ও তার স্ত্রী সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

মেহেরপুরের গাংনীতে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সের কর্মী আনারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার করমদী গ্রামের সিফাত আলীর মেয়ে নিলুফা খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ও ৩ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে আদালত। সি আর মামলা নং ৪২৮/২০১৯ইং। মামলার আসামীরা হলেন,বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সের কোম্পানী পরিচালক, বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সের চুয়াডাঙ্গার সহকারী অফিসার বাশারুল ইসলাম, গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের বাগান পাড়ার পিয়ার বক্স্রের ছেলে আনারুল ইসলাম তার স্ত্রী রাজিয়া খাতুন ও আনারুলের ভাতিজা আসাদ আলী। টাকা আত্মসাৎ মামলায় জামিন পেয়ে বাদী সহ পাওনাদারদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে। মামলার এজাহার ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,নানা প্রলোভন দেখিয়ে আনারুল ইসলাম এ এলাকার অন্তত ৪৫জন নারী পুরুষকে বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সে ডিপিএস করার জন্য ৫ লক্ষাধিক টাকা জমা নিলেও মেয়াদ পূর্ন হওয়ার পরও টাকা ফেরত দিচ্ছেনা। ক্ষতিগ্রস্থরা আনারুল ইসলাম এর কাছে টাকা চাইতে গেলে উল্টো মামলা হামলা হুমকি প্রদান করা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিবন্দী তহমিনা খাতুন জানান,বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স করার কথা বলে আনারুল বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্ট করে তাকে টাকা দিয়েছিলাম। মেয়াদ পার হলেও টাকা ফেরত না দিয়ে টাকা চাওয়ার অপরাধে নানা ভাবে হুমকী দিচ্ছে। জুলেখা খাতুন জানান, মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েক বছর পূর্বে বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স করিয়ে দেন আনারুল ইসলাম। মেয়াদ শেষ হলেও টাকা ফেরত দিচ্ছে। অনেক কষ্ট করে আনারুলের হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলাম। মাজেদা খাতুন জানান,আনারুলের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করেও টাকা পাইনি। টাকা চাইতে গেলে আনারুল বলে তোমার টাকা তো ইন্সুরেন্সে জমা করেছি। সেই টাকা আজও দেয়নী। দিনের পর পর শ্রমিকের কাজ করেছি। টাকা না খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করেছি। মোশাররফ হোসেন জানান,পাওনা টাকা দেয়া তো দুরের কথা নানা ভাবে হুমকী ও মিথ্যা অভিযোগ তুলে হয়রানী করছে। এছাড়া মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউকে এ বিষয়ে সালিস বৈঠকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নন জুডিসিয়াল স্টাম্পে লিখিত দিলেও টাকা ফেরত দেননি। আমঝুপি মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউকের অফিস সূত্রে জানা গেছে,নিলুফার আবেদনের প্রেক্ষিতে আনারুল ইসলামকে ডেকে বৈঠকে ০১/০৪/১৯ ইং তারিখ থেকে ৩ মাসের মধ্যে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই টাকা ফেরত দেয়নি। প্রতিবন্ধী সমসের আলী জানান,অর্থ অভাবে প্রায় সময়ই অনাহারে অর্ধহারে থাকতে হয়। শ্রম বিক্রি করে যৎ সামান্য আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলেনা কিন্তু আনারুলের প্রলোভনে সংসারে কষ্ট করে উপার্জিত অর্থ তার হাতে তুলে দেই। সেই টাকা না দিয়ে উল্টো হুমকি দিচ্ছে। নিলুফা খাতুনের আইনজীবি সাথী বোস জানান,অর্থ আত্মসাৎ মামলায় আনারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাজিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। ১ মাসের মধ্যে টাকা দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন আনারুল ইসলাম। কিন্তু তার স্ত্রী রাজিয়া খাতুন পলাতক রয়েছে। এছাড়া অপর ৩ আসামীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে আদালত। আগামি ২৩ জানুয়ারী এ মামলার শুনানী রয়েছে। বাদী,সাক্ষী সহ অন্যদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হবে এবং জামিন বাতিলের আবেদন করা হবে। এবিষয়ে কথা বলতে আনারুল ইসলামের বাড়িলে গেলে তাকে পাওয়া যায়নী। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ৩ দিন কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান বলেন,অন্য ক্ষতিগ্রস্থরা যদি আবেদন করে তাহলে আনারুল সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে কথা বলতে বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্সরে প্রধান কার্যালয়ের টেলিফোনে কল দিলে রিসিভ হয়নী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!