গাংনীতে সুদকারবারীর বিরুদ্ধে মামলা। অনেকেই নিঃস্ব হলেও অট্টলিকায় সুদকারবারীরা

কর্তৃক farukgangni

গাংনী নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম :

মেহেরপুরের গাংনীতে শফিউদ্দীন নামের এক সুদকারবারীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতারনার স্বীকার হয়ে বাহাগুন্দা গ্রামের হাদিবুল ইসলাম মেহেরপুর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। সম্প্রতি গাংনী উপজেলা সুদকারবারীদের ফাঁদে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে।    মামলা সূত্রে ও মামলার বাদী জানান,গাংনী পৌর এলাকার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের মৃত মইজ উদ্দীনের ছেলে শফিউদ্দীন নিজেকে একটি বেসরকারী সংস্থার (এনজিও) মালিক দাবি করে শতকরা ১২ ভাগ সুদে লোন দেয়া হচ্ছে এমন প্রলোভনে পড়ে ২০১৭ সালের জুন মাসের দিকে ৯০ হাজার টাকা গ্রহন করি। টাকা গ্রহনের সময় আমার নিজ নামীয় সোনালী ব্যাংকের একটি ফাঁকা চেক ও একটি ননজুডিশিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ২০১৮ সালের জুন মাসে সুদ সহ ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে চেক ও স্টাম্প ফেরত চাইলে টালবাহানা শুরু করে সুদকারবারী শফিউদ্দীন। পরে ফাঁকা চেকে ৯ লাখ টাকা বসিয়ে আমার নামে কোটে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ ঘটনার সুষ্ট বিচার পেতে মেহেরপুর আদালতে ৪০৭/৪০১৭/৪৬৪/৪০৩ ও ২০৯ ধারা মতে একটি মামলা দায়ের করেছি যার নং সি আর ৮৮/২০২০ ইং।        এ বিষয়ে সুদকারবারী শফিউদ্দীন জানান,হাদিবুল ইসলাম টাকা নিয়েছে টাকা ফেরত না দেওয়ার কারনে তার নামে একটি মামলা করেছি। একারনে আমার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছে। কি কারনে বা কোন শর্তে হাদিবুলকে টাকা দিয়েছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি কি ব্যবসা করি সবাই জানে তাই এ ব্যবসা তো আর ঢেকে রাখা যাবেনা।      গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহসমান জানান,সুদকারবারীদের কাছে সুদের টাকা নিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছে এ ধারনে বেশ কিছু অভিযোগ শোনা যাচ্ছে লিখিত অভিযোগ পেলে সুদকারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে একটি গোয়েন্দা সংস্থার উদ্যোগে গাংনীর সুদকারবারীদের একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। সুদকারবারীর তালিকায় রয়েছে গাংনী উত্তরপাড়ার কয়েকজন,পশ্চিম মালসাদহ, বাঁশবাড়িয়া, শিশিরপাড়া, কসবা, নওয়াপাড়া, বামুন্দী, কাজিপুর, জুগিন্দা, মোহাম্মদপুর, গাড়াডোব, কাজিপুর, ধানখোলা, তেঁতুলবাড়িয়া, তেরাইল, জোড়পুকুর, রামনগর, আমতৈল,সাহারবাটি, রামনগর, হেমায়েতপুর ও করমদী সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রয়েছে ছোট বড় সুদকারবারীরা। এসব সুদকারবারীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে।    ভুক্তভুগীরা জানান,নামসর্বস্ব কিছু এনজিও ও প্রভাবশালী সুদ ব্যবসায়ীর কাছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক চাষিরা দিন দিন পণবন্দী হয়ে পড়ছেন। দারিদ্র্যকে পুঁজি করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অফিস বানিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের নামে মানুষ শোষণ করে আসছেন এসব এনজিও ও সুদ ব্যবসায়ীরা। মানুষের সরলতা ও জীবনযাত্রার টানাপোড়েনের সুযোগে সুদকারবারীরা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।         স্থানীয়রা জানান, ব্যাংকঋণের দীর্ঘ জটিলতার বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুবিধা পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ আজ সুদের জাঁতাকলে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব, অনেক পরিবার পৈতৃক ভিটাহারা। অনেকে ঋণের বোঝা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। কৃষকদের এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে সরকারকে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি করেছে।       এদিকে সুদেও টাকা দিতে না পারায় উপজেলা বেশ কয়েকটি গামে দরিদ্র পরিবারের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি কসবা গ্রামের শকুর আলীর স্ত্রীর লিপি খাতুন ও মোহাম্মদপুর বাজার পাড়ার মশিউর রহমান ও তার মা সাহেরা খাতুন সুদকারবারীর হামলায় আহত হন। এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটলেও অত্মসম্মানের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা সুদকারবারীদের বিরুদ্ধে। এদিকে দামি গাড়ীতে ছুটছেন চিরচেনা কিছু মুখ। ক’দিন আগেও তাদের পরিচিতি ছিল দিনমজুর কিংবা শ্রমিক হিসেবে। কাজ জুটলে ভাত মিলবে নইলে উপোস। সুদকারবারীতে জড়িয়ে তারা রাতারাতি গাড়ি আর অট্টলিকা তৈরি করে আলিশান জীবন যাপন করছেন। আবার অনেকেই কয়েকগুন বেশি টাকা দিয়েও রক্ষা পাইনি সুদকারবারীদের কাছ থেকে। হতে হয়েছে হামলা মামলার মুখোমুখি।

সম্পর্কিত পোস্ট

১ কমেন্ট

মোঃ মুনশাদ আলী মার্চ ১৩, ২০২০ - ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

আমার বোনের বাড়ি ঘর শেষ করে দিয়েছে এ শপিং আবার মামলাও করেছে বোনের নামে এখন এলাকা ছেড়ে ঢাকায় আছে

উত্তর

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!