ভারতের শিলিগুড়ি কারাগারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মানবেতর জীবন

কর্তৃক farukgangni

ফারুক আহেমদ :

ভারতের শিলিগুড়ি কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন মেহেরপুরের গাংনী ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম রিন্টু। বৈধভাবে ভারতে ভ্রমন করতে গিয়ে দুস্কৃতি সন্দেহে গত বছর ২৭ নভেম্বর ভারত নেপাল সীমান্তে খড়িবাড়ির পানিট্যাঙ্কি এলাকা থেকে নুরুল ইসলাম রিন্টু ও তার বন্ধু নিউজিল্যান্ডের নাগরিক অ্যান্ড্রু জেমসকে গ্রেফতার করে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম রিন্টু গাংনী উপজেলার বাদিয়াপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সহিদুল হকের ছেলে।
নুরুল ইসলাম রিন্টুর পারিবারিক সূত্র জানান, ভারতীয় উপহাই কমিশন রাজশাহী থেকে ভিসা নিয়ে বৈধভাবে গত বছরের ১৫ নভেম্বর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ভ্রমনে যায় গাংনী ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম রিন্টু। এরপর কি কারনে তাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) গ্রেফতার করেছে তারা জানে না স্বজনরা। তবে নুরুল ইসলাম রিন্টুর মুক্তির বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এম এ খালেক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্বজনরা।
এদিকে গাংনী ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম রিন্টু সহ ভারতের বিভিন্ন কারাগারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে কয়েক হাজার বাংলাদেশী। তাদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো তৎপরতা নেই কর্তৃপক্ষের। আর দেশে তাদের স্বজনদের দুশ্চিন্তা ও মানসিক যন্ত্রণার শেষ নেই। ভারতের কারাগার থেকে কীভাবে, কোন উপায়ে সন্তানকে, ভাইকে, স্বজনকে, আত্মীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়- তার পথ খুঁজে ফিরছে তারা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ছাড়া পরিবারের পক্ষে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় দাবি স্বজনদের।
ভারতীয় গণমাধ্যমে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২৭ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় নিউজিল্যান্ডের নাগরিক অ্যান্ড্রু জেমস নেপাল থেকে পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসেছিলেন বন্ধু নুরুল ইসলাম রিন্টুর সাথে দেখা করতে। সেখানে তাদের দুস্কৃতি সন্দেহে তাদের দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে সীমান্তে মোতায়েন থাকা এসএসবি জওয়ানরা। এসময় নুরুল ইসলাম রিন্টু সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) কর্মকর্তাকে বৈধ ভিসা পাসপোর্ট দেখাতে পারলেও নিউজিল্যান্ডের নাগরিক অ্যান্ড্রু জেমসের কাছে কোনও পাসপোর্ট বা ভিসা পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেছে ভারতীয় ভুয়ো আধার কার্ড, প্যান কার্ডের সাথে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স। এসব কারনে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) তাদের গ্রেফতার করে খড়িবাড়ি থানায় সোপর্দ করে। পরে তাদের দুজনকে খড়িবাড়ি থানা পুলিশ শিলিগুড়ির মহকুমা আদালতে নিলে বিচারক তাদের জেল হাজাতে প্রেরন করে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম রিন্টুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সহিদুল হক বলেন,তার সন্তান শিলিগুড়ির কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তার ছেলে বৈধভাবে ভারত ভ্রমনে গিয়েছিলেন। বৈধ কাজগপত্র থাকার পরও কেন তাকে গ্রেফতার করা হলো তা সরকারের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখে ছেলের মুক্তির বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কাজিপুর ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক রিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ বৈধ ভাবে চিকিৎসা সহ ভারত ভ্রমনে যায়। একারনে ভারত সরকার বিপুল পরিমান বাংলাদেশী অর্থ আয় করে। বৈধভাবে ভারতে গিয়ে গ্রেফতার কিংবা বিড়ম্বনার শিকার হলে ভারতে ভ্রমন ও চিকিৎসার প্রতি মানুষ আগ্রহ হারাবে। তাই বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বিড়ম্বনা ও গ্রেফতারের বিষয়গুলো যৌথভাবে দেখভাল করলে সাধারন মানুষ উপকৃত হবে।
এদিকে কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশী উপ হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন,বাংলাদেশী নাগরিক নুরুল ইসলাম রিন্টুর আটকের বিষয়টি তার জানা নেই। খড়িবাড়ি থানা কিংবা শিলিগুড়ি জেলা কারাগার থেকে তাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে মুক্তির বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন

shares
error: Content is protected !!